এবিএনএ : বিশ্বের একটি অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে এর জনপ্রিয়তা। সেই সঙ্গে প্রতিদিনই যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন ব্যবহারকারী। বাংলাদেশেও এখন শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে ফেসবুক। বিশেষ করে বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে।
বাংলাদেশে মূলধারার গণমাধ্যমগুলো কোন সংবাদ বা ঘটনা এড়িয়ে গেলেও ফেসবুকে আলোচনার কারণে সেটি গণমাধ্যমে স্থান পাচ্ছে।
মূলধারার গণমাধ্যমের ওপর সরকারের একটা চাপ থাকে যার কারণে তারা চাইলেও অনেক ঘটনা প্রকাশ করতে পারে না। তবে ফেসবুকের ক্ষেত্রে এ ধরনের চাপ নেই। আর এ কারণেই এখন খবর প্রচার ও প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয় মাধ্যমে পরিণত হয়েছে ফেসবুক।
আজ সারাবিশ্বে ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম’ দিবস পালিত হচ্ছে। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে কথা বলার এখনই সময়।
সরকার কিংবা বিভিন্ন পক্ষের চাপের কারণে মূলধারার গণমাধ্যম যখন কোন সংবাদ পরিবেশন করতে পারেনা তখন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমই যেন হয়ে উঠছে সংবাদ প্রকাশের প্রধান বাহন।
এ সম্পর্কে চ্যানেল আই অনলাইনের সম্পাদক জাহিদ নেওয়াজ খান জানান, বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে ফেসবুক একটি সামাজিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব খবর আসে সেটি সরকার চাইলেও অনেক সময় নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা।
এ সম্পর্কে সাম্প্রতিক ঘটনার একটি উদাহরণ দেয়া যায়। বেশ কিছুদিন আগে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতর কলেজ ছাত্রী তনু হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি করলেও এই খবরটি মূলধারার গণমাধ্যমে আগে প্রকাশ হয়নি। বরং ফেসবুকে ব্যাপক লেখালেখির কারণে শেষ পর্যন্ত মূলধারার গণমাধ্যম সেটিকে তাদের এজেন্ডায় নিয়ে আসতে বাধ্য হয়। ফেসবুকে আলোচনার কারণেই তনু হত্যার দু’দিনের মাথায় সবগুলো মূলধারার গণমাধ্যমে খবরটি প্রকাশ করা হয়।
একই ভাবে সিলেটে শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যাকাণ্ডের ভিডিওটি প্রথম সবার নজরে এসেছিল ফেসবুকের মাধ্যমে। তারপর এটি নিয়ে সংবাদপত্র এবং টেলিভিশন চ্যানেলে খবর প্রচারিত হয়।
তনু হত্যাকাণ্ডের খবরটি পরিবেশন না করার জন্য সরকার কিংবা সেনাবাহিনীর দিক থেকে মূলধারার গণমাধ্যমের উপর সরাসরি কোন চাপ ছিলনা। কিন্তু সেনাবাহিনী বা সেনানিবাস সংক্রান্ত এসব খবরে সংবাদপত্র এবং টেলিভিশন চ্যানেলগুলো নিজেরাই এক ধরনের চাপ অনুভব করে। সে কারণেই মূলধারার গণমাধ্যমে খবরটি প্রথমে আসেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রচারের কারণে সরকার হয়তো ভেবে থাকতে পারে যে, খবর ধামাচাপা দেয়ার চেয়ে খবর প্রচার করাই ভালো। এমনটাই মন্তব্য করেছেন জাহিদ নেওয়াজ খান।
আবার সংবাদপত্র কিংবা টেলিভিশনের খবর নিয়ে পাঠক কী ধরনের মনোভাব পোষণ করছেন সেটি তাৎক্ষনিকভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়না। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাঠকদের মনোভাব তাৎক্ষনিকভাবেই জানা যায়। তাই যে কোনো ঘটনা ফেসবুকেই বেশি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।